আজ থেকে ঠিক বিশ বছর আগে, একটি হাস্যকর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গুগুল তার ঠিক এক সপ্তাহ পর জিমেইল লঞ্চ করে। অনেকেই এটিকে তখন ধাপ্পাবাজি মনে করেছিলো। জিমেইল সার্ভিস তখন সর্বপ্রথম ব্যবহারকারীদের বিনামূল্যে ১ গিগাবাইট স্টোরেজ সুবিধা দিয়েছিলো, যেটা ছিলো ১৫ এমবির ইনবক্স এবং অনেক ইমেইল সার্ভিস যখন টাকা দিয়ে কিনে ব্যবহার করতে হত। মজার বিষয় হচ্ছে, জিমেইল সার্ভিসটি ঘোষণা করা হয়েছিলো এপ্রিল ফুল এর দিন যার উদ্দেশ্য ছিল প্র্যাঙ্ক করা।
খুব শীঘ্রই জিমেইল প্রোগ্রামটি জনপ্রিয় হতে থাকে। এখন যেমন আমাদের সবারই একটি facebook অ্যাকাউন্ট দরকার ঠিক তেমনি তখন সবাই চাইতো আমার একটি জিমেইল একাউন্ট হওক। মূলত এই এক গিগাবাইট ফ্রি স্টোরেজ তখন শিক্ষার্থীদের মাঝেও ইমেইল কে জনপ্রিয় করে তোলে। তারা একজন অপরজনের সাথে যোগাযোগ করতে তখন ইমেইল ব্যবহার করত৷ সেই থেকে এটি এমন জনপ্রিয়তা লাভ করে যে, আমাদের অনলাইন আইডেন্টিটি কিংবা ইমেইল বুঝাতে অনেকসময় আমরা শুধু জিমেইল একাউন্ট থাকাকেই বুঝে থাকি৷
জিমেইল এর বর্তমানে ১.২ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে, যা নির্দেশ করে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১/৭ ভাগ। ২০ বছর আগে যখন জিমেইল বিনামূল্যে এক গিগাবাইট প্রদান করেছিল তখন যোগাযোগের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু আজ ২০ বছর পর যোগাযোগের অনেক মাধ্যম যেমন whatsapp মেসেঞ্জার আবিষ্কার হওয়ার পরে এগুলো তার জায়গা দখল করে নিয়েছে। কিন্তু তবুও জিমেইলের জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহার এখনো আগের মতোই রয়েছে। এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে আগামী ২০ বছর পর জিমেইলের অস্তিত্ব থাকবে কি?
জিমেইল লঞ্চ হওয়ার সময় যে বিষয়টি সব মানুষের মাঝে সাড়া ফেলে তা হচ্ছে বিনামূল্যে দেওয়া এক গিগাবাইট storage। “আপনি যদি চিন্তা করেন জিমেইল তখন কি পরিমান মূল্য সংযোজন করেছিল তার উত্তর হবে দ্রুতগতির সার্চে বিদ্যুৎ চমকের মত বিপ্লব ঘটানো”, বলেছেন গুগুল জিমেইল এর ভিপি।তখন মানুষ ইমেইল ম্যানেজমেন্ট করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়তো, স্বল্প storage স্প্যাম এবং অন্যান্য ইমেইলের ফলে খুব সহজেই ইনবক্স স্টোরেজ ভর্তি হয়ে যেত। যার ফলে নতুন ইমেইল রিসিভ করার জন্য পূর্বের ইমেইল ডিলিট করতে হতো। গুগলের জিমেইলের দৈত্যকার স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি এই সমস্যার সমাধান করেছিল।
২০০৮ সালে গুগল, জিমেইল এর নতুন থিম সবার সামনে নিয়ে আসে, যা ছিল অনেক ইউজার ফ্রেন্ডলি। বর্তমানে আমরা জিমেইলের ১৫ জিবি পর্যন্ত বিনামূল্যে স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি পেয়ে থাকি। ২০০৬ সাল নাগাদ গুগলের জিমেইল মোবাইলে ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে গুগলের জিমেইল সার্ভিস অনেক অনেক ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। ছবি আদান প্রদান ফাইল আদান-প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের এইচটিএমএল ফর্ম, স্মার্ট রিপ্লাই সহ অনেক নতুন ফিচার বর্তমানে জিমেইল এর সংযোজন হয়েছে। এবং নিত্য নতুন জিমেইল এর বিভিন্ন সার্ভিস আপডেট করা হচ্ছে ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে।