বাংলাদেশে ১০ লাখ টাকার মধ্যে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং উচ্চ মুনাফার ব্যবসা ধারণা:
১০ লক্ষ টাকা দিয়ে কী ব্যবসা করা যায়? ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে বাংলাদেশে নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য বেশ কিছু লাভজনক এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা ধারণা রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় ধারণা নিচে উল্লেখ করা হল:
১) খাবারের ব্যবসা:
হোম-মেড খাবার:
ছাত্র মেস কিংবা অফিসে চাকরি করে এমন মেসে এ খাবার বিতরণ, মুখরোচক খাবার, মিষ্টি, পাউরুটি, বেকিং আইটেম ইত্যাদির মতো হোম-মেড খাবার তৈরি করে অনলাইনে বা স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা যায়।
সুবিধা: কম বিনিয়োগ, উচ্চ চাহিদা, দ্রুত লাভ।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, মান নিয়ন্ত্রণ, বাজারজাতকরণ।
ছোট খাবারের দোকান:
ফাস্ট ফুড, রাস্তার খাবার, মোমো, চাটপটি ইত্যাদির মতো জনপ্রিয় খাবার বিক্রি করে একটি ছোট দোকান খোলা যেতে পারে।
সুবিধা: অপেক্ষাকৃত কম বিনিয়োগ, তুলনামূলকভাবে সহজ পরিচালনা।
ঝুঁকি: অবস্থান, লাইসেন্স, লাভের মার্জিন।
২) অনলাইন ব্যবসা:
ই-কমার্স:
নিজস্ব ওয়েবসাইট বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে (যেমন, বাজার, চালরি) পোশাক, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, ঘরের সাজসজ্জা ইত্যাদি বিক্রি করা।
সুবিধা: কম স্টক, বিস্তৃত বাজার, 24/7 খোলা থাকে।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, ডেলিভারি, অনলাইন পেমেন্ট।
ফ্রিল্যান্সিং:
লেখা, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ভার্চুয়াল সহকারী ইত্যাদির মতো দক্ষতা বিক্রি করে অনলাইনে আয় করা।
সুবিধা: নমনীয়তা, নিজের বস, কম স্টার্ট-আপ খরচ।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়া, আয়ের অনিশ্চয়তা।
৩) পরিষেবা ব্যবসা:
হোম ডেলিভারি:
স্থানীয় রেস্তোরাঁ থেকে খাবার, কেনাকাটার জিনিসপত্র, ওষুধ ইত্যাদি হোম ডেলিভারি পরিষেবা শুরু করা।
সুবিধা: ক্রমবর্ধমান চাহিদা, স্থানীয় বাজার, নমনীয়তা।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, পরিবহন ব্যবস্থা, লাভের মার্জিন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট:
বিবাহ, জন্মদিন, কর্পোরেট অনুষ্ঠান ইত্যাদির জন্য ইভেন্ট পরিকল্পনা এবং পরিচালনা পরিষেবা প্রদান।
আরও পড়ুন: একটি নতুন ব্যবসা কীভাবে শুরু করা যায় এবং ব্যবসা শুরুর আগে কি কি বিষয় বিবেচনা রাখা উচিত?
৪) উৎপাদন ব্যবসা:
হস্তশিল্প:
গহনা, পোশাক, বাঁশের জিনিসপত্র, মৃৎশিল্প ইত্যাদির মতো হস্তশিল্প তৈরি এবং বিক্রি করা।
সুবিধা: সৃজনশীলতা, উচ্চ মার্জিন, স্থানীয় বাজার।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, দক্ষ শ্রমিক, বাজারজাতকরণ।
খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ:
মশলা, আচার, শুকনো খাবার ইত্যাদির মতো খাবার প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করা।
সুবিধা: দীর্ঘস্থায়ী পণ্য, চাহিদা, তুলনামূলকভাবে সহজ প্রক্রিয়া।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, মান নিয়ন্ত্রণ, সরকারী অনুমোদন।
৫) শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:
অনলাইন কোর্স:
আপনার দক্ষতা বা জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে অনলাইন কোর্স তৈরি এবং বিক্রি করা।
সুবিধা: ব্যাপক দর্শক, নমনীয়তা, পাসিভ আয়।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, কোর্স তৈরির খরচ, বাজারজাতকরণ।
টিউশন:
স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন বিষয়ে টিউশনি দেওয়া।
সুবিধা: কম বিনিয়োগ, নমনীয়তা, দ্রুত লাভ।
ঝুঁকি: প্রতিযোগিতা, শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া, আয়ের অনিশ্চয়তা।
উল্লেখ্য যে, যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে বাজার গবেষণা করা, একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করা এবং অর্থায়নের ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ব্যক্তিগত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে আপনার জন্য কোন ধারণাটি সবচেয়ে ভালো হবে তা নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সফল হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ়তা এবং ধৈর্য্যের প্রয়োজন হবে। আপনার ব্যবসা জন্য শুভকামনা!
তো আশা করি আমাদের ” ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে কী ব্যবসা করা যায়? ” এই আর্টিকেল পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন৷ এধরনের আরও আর্টিকেল পড়তে আমাদের ‘ব্যবসা কথন‘ এ ক্লিক করুন।